বুধবার , ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধ ও দুর্ণীতি
  3. অর্থনীতি
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলা
  9. খেলাধুলা
  10. গণমাধ্যম
  11. চাকরি
  12. চাকুরী
  13. জাতীয়
  14. জীবনযাপন
  15. ট্রেন্ডিং

একটি টেবিলে একটি চিঠি পড়ে ছিল যা ফিরোজের ছিল, যিনি হলের ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া ছাত্র ছিলেন।

প্রতিবেদক
প্রতিনিয়ত খবর
সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩ ৩:৪২ অপরাহ্ণ
শ্বশুরের কাটা মাথা নিজের ব্যাগে বহন করছিলেন পুত্রবধূ

প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬: ৪৩

একটি টেবিলে একটি চিঠি পড়ে ছিল যা ফিরোজের ছিল, যিনি হলের ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া ছাত্র ছিলেন।

ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতা বিজয় একাত্তর হল ঢাকায় একটি ভবন থেকে মারা যাওয়া ভাগ মো. ফিরোজ কাজীর (২২) পাঠ টেবিল পাওয়া গেছে একটি চিঠি। প্যাড খাতার এক পৃষ্ঠায় সেই চিঠির নিচের দিকে ফিরোজের নাম লেখা রয়েছে। চিঠির হাতের লেখাটি ফিরোজের লেখার সাথে মিল আছে বলে রুমেটরা মনে করতেও ফিরোজের ভাইপ্লেক্স প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার রাতে বিজয় একাত্তর হল নামক একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার সময় সত্যিই একটি খারাপ দুর্ঘটনা ঘটে ফিরোজের। সৌভাগ্যবশত, কিছু অন্যান্য ছাত্র কি ঘটেছে এবং তাকে সাহায্য করেছে. তারা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। দুঃখজনকভাবে সেখানকার চিকিৎসক জানান, ফিরোজ মারা গেছেন। ফিরোজের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের পুখরিয়া গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট নামে একটি জায়গায় চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। একই ভবনের ২০৩ নম্বর কক্ষে থাকতেন জিয়াউর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি।

চিঠিতে যা লেখা

ফিরোজের পড়ার টেবিলে পাওয়া টেবিল চিঠির উপর ১৯০৯/২৩ লেখা লেখা রয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘মানুষে বাঁচে তার সম্মানে। আজ মানুষের জন্য আমার সম্মান নাই, এই স্থায়ী থাকার আমার কোনো অধিকার নেই। আমার সুবিধা দায়ভার একান্ত আমার। স্যারি মা! বাড়ি থেকে আসা আসা কথা রাখতে পারলাম না। আমার জীবন নিয়ে তাশ। এর ঠিক নিচে লেখা হয়েছে—‘রাত: ১১টা ৩’।

পৃষ্ঠার নিচের অংশে লেখা হয়েছে, ‘আমার ওয়ালেটেরকে কিছু টাকা আছে। বন্ধুদের কাছে পছন্দের মান হাতে দিতে৷ কার্ডের পাস ওয়ার্ড ৮০৭৯ আর ফোনের লক প্রতীক দিয়ে পালা। আমার লাশের পোস্টমর্টেম না করে আমার বাড়িতে আমাদের দেওয়া হয়। জটিল রূপ সমস্যায় কোনো জড়ানো না হয়। মানুষ বাঁচুক। শুধু শুধু আপামর অক্সিজেন আর নষ্ট করতে না চাই।

ফিরোজের আস্তানায় তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা জানান, তার হাতের লেখা দেখতে এই কাগজের লেখার মতো। ছাত্রাবাসের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনও মনে করেন যে এই কাগজটি এমন একটি নোট যেখানে ফিরোজ নিজেকে আঘাত করার কথা বলেছে। তিনি বলেন, ফিরোজ রুম থেকে বের হওয়ার সময় তার ফোন, মানিব্যাগ এবং এই নোটটি পেছনে ফেলে যায়। ছাত্রাবাস প্রশাসনও ফিরোজের পরিবারকে এই কঠিন সময়ে অনেক সাহায্য করছে।

একটি ফেসবুক পোস্টে ফিরোজ বলেন, প্রত্যেকেরই নিজের মতো করে বাঁচতে সক্ষম হওয়া উচিত এবং মানুষ সহ ঈশ্বরের তৈরি সবকিছুই সুন্দর। সুতরাং, কাউকে বাদ দেওয়া বা উপেক্ষা করা উচিত নয়। আমাদের সবকিছুর জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।

লেখা ফিরোজের কি না, সন্দেহ ভাইয়ের

ফিরোজের বড় ভাই ফেরদৌসের ফোন আসে যে ফিরোজ মারা গেছে, তাই তিনি দ্রুত ঢাকার হাসপাতালে যান। তাদের গ্রামে ফেরদৌসের মোবাইল ফোন ঠিক করার ব্যবসা রয়েছে এবং তিনিই ফিরোজের স্কুলে পড়ার খরচ বহন করেন। পরের দিন, যখন পত্রিকা থেকে কেউ ফিরোজ চিঠি লিখেছে কিনা জানতে চেয়েছিল, ফেরদৌস নিশ্চিত ছিলেন না। ফিরোজ তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন এবং তাদের বাবা একজন কৃষক এবং তাদের মা বাড়িতে থাকেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য

একাউন্টিং এবং ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ওয়াহিদুল আলম বিজয় একাতার হলে কিছু একটা ঘটতে দেখেছেন। তিনি জানান, গতকাল রাত ১২টা ৫০ থেকে ১২টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে কাজী ফিরোজ নামে এক ব্যক্তি যমুনা ব্লক নামের একটি ভবন থেকে পড়ে যান। ফিরোজ একটা পাকা রাস্তার পাশে মাটিতে নামল, যেটা নোংরা ছিল। ফিরোজের হাত রাস্তা ছুঁয়ে যাচ্ছিল।

গতকাল ওয়াহিদুল আলম একটি মাঠে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলেন। তিনি যমুনা ব্লক নামক একটি জায়গার দিকে তাকাচ্ছিলেন, হঠাৎ তিনি একটি চিৎকার শুনতে পেলেন। তখন তিনি দেখতে পেলেন যে, কাপড়ের টুকরো নিচে পড়ে আছে। এর পর খুব বিকট শব্দ হলো। ওয়াহিদুল বুঝতে পারলেন কেউ হয়তো লাফিয়ে পড়েছে বা পড়ে গেছে। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং অন্যান্য লোকজনও আসেন। তারা কাজী ফিরোজ নামে এক ব্যক্তিকে ঘামে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। তারা তাকে জল দিল এবং তার বুকে আঘাত করল এবং সে আবার শ্বাস নিতে শুরু করল। পরে তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ওয়াহিদুল আলম জানান, কাজী ফিরোজের গায়ে লম্বা স্কার্ট ও গলায় গামছা ছিল। তিনি আরও বলেন, শেখ রাব্বি একজন ছাত্র এবং আরও কয়েকজন ছাত্র কাজী ফিরোজকে খুঁজে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান।

রুমমেটরা যা বললেন

কাজী ফিরোজের রুমমেট মাসুম বিল্লাহ (রুমমেট) বলেন, “মঙ্গলবার (গতকাল) সন্ধ্যায় লাইব্রেরি থেকে রুমে এলে ফিরোজ কিছুক্ষণ পর রুমে আসে। সাড়ে ১০টার আগে ও পরে ফিরোজ সবাইকে বললেন, “আমার কাছ থেকে কোনো টাকা ট্রান্সফার করেছেন কি না বলুন। দুই টাকা হলেও বলুন। আমি দিতে চাই. আপনি যদি তাদের গ্রহণ করেন তবে আমাকে এখন বলুন।

মাসুদ যে কক্ষে থাকেন, সেখানে ফিরোজ নামে আরও একজন ছিলেন। মাসুদ আমাকে জানায়, গতকাল বেলা ১২টার দিকে ফিরোজ তখনও রুমে ছিল। মাসুদ আরও বলেন, ফিরোজকে একটু অস্থির মনে হচ্ছিল। ফিরোজ মাসুদের কাছে ফোন করার জন্য তার মোবাইল ফোন ধার করতে পারে কিনা জানতে চাইলেন। ফিরোজ ফোন নিল, কল করল, কিছুক্ষণ পর মাসুদকে ফেরত দিল।

গভীর রাতে মাসুম বিল্লাহ মানিব্যাগ ও ফোন না নিয়ে ঘর থেকে বের হন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম সে কোথায় যাচ্ছে, এবং সে বলল সে একাত্তর নামক জায়গায় একটা ছোট কাজে যাচ্ছে। আমি আর কোনো প্রশ্ন করিনি। ফিরোজের জন্য যে রাতের খাবার ছিল তার সামান্যই সে খেয়েছিল।

বিষণ্ন ছিলেন ফিরোজ

গোপন থাকতে চান ফিরোজের বন্ধু একটি পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরোজের বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড ছিল। কিন্তু সম্প্রতি, তাদের সম্পর্কের সমস্যা শুরু হয়েছিল, যা ফিরোজকে দুঃখিত করেছিল। ফিরোজের পরিবারও তাদের একসাথে ফিরে আসতে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু অন্য ব্যক্তি জিনিসগুলি ঠিক করতে চায়নি। এতে ফিরোজ আরও দুঃখী হয়ে ওঠে।

থানার ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি জানান, বিশেষ ডাক্তারি পরীক্ষার পর কাজী ফিরোজের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা লাশ নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলে সেখানেই তাকে দাফন করা হবে। পুলিশ তদন্ত করছে কি ঘটেছে এবং এ বিষয়ে একটি মামলা রেকর্ড করেছে।

সর্বশেষ - সারাদেশ